বইয়ের নাম: অপরাজিত 👤 লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় 📃 প্রকাশনা: অবসর প্রকাশনী 📑 ক্যাটাগরি: উপন্যাস 📄 পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৪৫ 💷 ...
বইয়ের নাম: অপরাজিত
👤 লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
📃 প্রকাশনা: অবসর প্রকাশনী
📑 ক্যাটাগরি: উপন্যাস
📄পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৪৫
💷 মূল্য: ১৭৬ ৳
বাংলা কথাসাহিত্যে শরৎচন্দ্রের পর'ই সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় সাহিত্যিক হলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ শতকের শুরুতে বাঙলা উপন্যাসের জগতে যে বিখ্যাত "তিন বন্দোপাধ্যায়"- এর আবির্ভাব ঘটে, যাদের কালজয়ী সব রচনা সমৃদ্ধ করেছে বাঙলা সাহিত্যকে, তাদের একজন হলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। "অপরাজিত" বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ে র সবচেয়ে আলোচিত এবং নন্দিত উপন্যাসগুলোর মধ্যে একটি। এটি তার দ্বিতীয় উপন্যাস।"প্রবাস ী" মাসিকপত্রে ধারাবাহিক ভাবে ছাপা হওয়ার দুই বছরের মাথায় এটি দুই খণ্ডে বিভক্ত আকারে ১৯৩২ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়।বিখ্যাত চলচিত্রকার সত্যজিৎ রায় পরবর্তীতে এ উপন্যাসের চলচিত্রায়ণ করেন। সাময়িকপত্রে প্রকাশের পূর্বে লেখকের পরিকল্পিত নাম ছিলো "আলোর সারথি" বলে জানা যায়,তবে "প্রবাসী"তে ছাপানোর সময় তিনি আবার নাম পরিবর্তন করে "অপরাজিত" রাখেন।
বিভূতিভূষণের প্রথম এবং সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস "পথের পাঁচালি"তে আমরা যে ছোট্ট অপুকে দেখি,তারই পরিণতির গল্প হলো "অপরাজিত"।নিশ্চ িন্দিপুর নামের এক প্রত্যন্ত গ্রামে দারিদ্রের কষাঘাতের মধ্যেও প্রকৃতঘনিষ্ঠ আনন্দময় জীবনে বেড়ে উঠছিলো দুই হরিহর আত্মা-অপু এবং তার বোন দুর্গা।বৃষ্টিতে ভিজে জ্বরে পড়ে দুর্গার মৃত্যু হয়।পিতা হরিহর গ্রাম থেকে চলে আসেন কাশীতে। সেখানে তার মৃত্যু হয়। মাতা সর্বজয়া অপুকে নিয়ে শহরে চলে আসেন।সেখান থেকেই এ উপন্যাসের সূচনা।এ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র অপু, মিষ্টি চেহারার খামখেয়ালী এক ছেলে। পড়তে ভালবাসে খুব। লেখাপড়াতেও তার ছাপ ফেলে সে।বহু অভাব-দুঃখ-কষ্টে র মধ্যেও সে তার লেখাপড়া চালিয়ে গেছে।অদম্য আগ্রহে কলেজের পাঠ শেষ করে সে, কিন্তু বিধি বাম! বাধা হয়ে আসে দারিদ্র্য-অর্থক ষ্ট-অভাব, পুরো উপন্যাস জুড়েই যা তাড়া করেছে অপুকে।ইতোমধ্যে তার মায়ের মৃত্যু হয়।জঠর জ্বালা মেটাতে কাজের খোঁজে বেড়িয়ে পরে সে। কখোনো ছেলেমেয়েদের পড়ানো, কখোনো পত্রিকা বিক্রয়,লেখালেখি ,লোহালক্কড়ের ব্যবসায় নেমে খাওয়া-পরার খরচ মেটায় সে।অপুর বোহেমিয়ান জীবনে সুরের ঝংকার নিয়ে আসে, অপর্ণা-তার সহধর্মিণী। উপন্যাসে অপুর সাথে অপর্নার পরিচয় ও বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়াটুকু বেশ নাটকীয়।অপুর শূণ্যজীবনে অপর্ণা যেন আশা ও স্বপ্নের বাতি হিসেবে এসেছিল।আহা! সে কী ভালোবাসা, অভিমান, একে অপরের প্রতি আবেদন! বইটি না পড়লে তা জানা যাবে না।নিশ্চিন্দিপু রের জীর্ণকুটিরে অশ্রু লুকিয়ে পরম মমতায় সংসার গুছিয়ে নেয় বাবা-মা'এর অতি আদরের অপর্না। চাঁপাফুলের আকুল করা ঘ্রাণে অপু-অপর্নার প্রেম,ভালোবাসা, অভিমান,চিঠির জবাব না দিয়ে অপুর ছন্নছাড়া জীবণ,খুনসুঁটিতে ভরপুর সংসারের চমৎকার চিত্রায়ন পাওয়া যায় উপন্যাসটিতে।বড্ ড টানাপোড়েনের সংসারে, কলকাতার একরুমের কামরায় বিকেলের শেষে অপর্ণার ছোঁয়ায় অপুর জীবন ভালোবাসার ছাঁদে বাধা পড়ে।তবে অদৃষ্টের নির্মম পরিহাস,সন্তান জন্মের সময় অপর্ণার মৃত্যু অপুকে একা করে দেয়।পুত্র কাজলকে নিয়ে আশায় বুক বাঁধে অপু।অপু যে অনিন্দ্যসুন্দর পরিবেশ,যে আনন্দ, যে প্রকৃতির সান্নিধ্যে বড় হয়েছে- কলকাতায় তার ছেলের এসবের অপূর্ণতা অপুকে বড় ভোগায়। তাই সে এক সময় ফিরে আসে শিকড়ে-- নিশ্চিন্দিপুরে। হয়ত বা সেই আগের মত নেই অনেক কিছুই,তবুও সেই শিকড়ে, সেই একই ভাবে বেড়ে উঠতে আরেক অপু!
ঈষৎ বৃহৎ উপন্যাসটিতে মোটা দাগে যেটা চোখে পরে, সেটা হল অপুর অসাধারণ জীবনবোধ-তার হার না মানা মনোভাব।মা,স্ত্র ী,বন্ধুদের জন্য তার বুকভরা ভালোবাসা।জীবনের অনেক বাধা পেরিয়েও তার মধ্যে নৈরাশ্য বাসা বাঁধে নি,তার অনুপ্রেরণা তার আবাল্য সাথী, তার বিস্ময়ের বস্তু-প্রকৃতি।প ্রকৃতির বিশালতায় সে মুগ্ধ হয়েছে, প্রকৃতি থেকে সে অকৃপণ হস্তে আহরণ করেছে তার জীবন-সঞ্জীবনী,ব িস্ময়াবিষ্ট হয়ে সে আবিষ্কার করেছে প্রকৃতি ও মানব জীবনের অখণ্ড-অভিন্ন সম্পর্কের চিরায়ত তাৎপর্য,শ্রবণ করতে পেরেছে প্রকৃতির মাঝে আপন সত্তাকে খুঁজে নেওয়ার আহ্বান।লেখকের একটি কথা থেকে কিছুটা হলেও সে ধারণা পাওয়া যায়-"সে জন্ম-জন্মান্তরে র পথিক-আত্মা, দূর হইতে কোন সুদূরের নিত্য নূতন পথহীন পথে তার গতি, এই বিপুল নীল আকাশ, অগণ্য জ্যোতিলোক, সপ্তর্ষিমণ্ডল, ছায়াপথ, বিশাল অ্যান্ড্রোমিডা নীহারিকার জগৎ বহির্ষদ পিতৃলোক—এই শত সহস্ৰ শতাব্দী তার পায়ে-চলার পথ—তাঁর ও সকলের মৃত্যু দ্বারা অস্পষ্ট সে বিরাট জীবনটা নিউটনের মহাসমুদ্রের মত সকলেরই পুরোভাগে অক্ষুন্নভাবে বর্তমান-নিঃসীম সময় বাহিয়া সে গতি সারা মানবের যুগে যুগে বাধাহীন ।…" এছাড়া ভালো লেগেছে অপুর জীবনের বড় বড় দুঃখ আর অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভালোলাগার প্রাপ্তির বর্ণনা।অপুকে মনে হয়েছে আমাদের নিত্যকার জীবনে অতি সাধারণ,অতি আপনার, অতি পরিচিত কেউ--কিন্তু কোথায় যেনো আমাদের সব্বাইকে ছাড়িয়ে সে মহিমান্বিত-জীবন যুদ্ধে অপরাজিত এক রথের সারথি !
#হ্যাপি_রিডিং 🙂
পুনশ্চ: পরে কোনো একসময় অপুর পুত্র কাজলকে নিয়ে উপন্যাস লেখার আকাঙ্খা বিভূতিভূষণ করেছিলেন। কিন্তু তার জীবদ্দশায় তিনি তা করে যেতে পারেন নি।তার একমাত্র পুত্র তারাদাস বন্দোপাধ্যায় অপু-কাহিনীর তৃতীয় খণ্ড হিসেবে বহু পরে "কাজল" রচনা করেন।যদিও আমার এখোনো পড়ার সৌভাগ্য হয় নি সেটা,আপনারা পড়ে দেখতে পারেন কিন্তু! 🙂
👤 লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
📃 প্রকাশনা: অবসর প্রকাশনী
📑 ক্যাটাগরি: উপন্যাস
📄পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৪৫
💷 মূল্য: ১৭৬ ৳
বাংলা কথাসাহিত্যে শরৎচন্দ্রের পর'ই সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় সাহিত্যিক হলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিভূতিভূষণের প্রথম এবং সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস "পথের পাঁচালি"তে আমরা যে ছোট্ট অপুকে দেখি,তারই পরিণতির গল্প হলো "অপরাজিত"।নিশ্চ
ঈষৎ বৃহৎ উপন্যাসটিতে মোটা দাগে যেটা চোখে পরে, সেটা হল অপুর অসাধারণ জীবনবোধ-তার হার না মানা মনোভাব।মা,স্ত্র
#হ্যাপি_রিডিং 🙂
পুনশ্চ: পরে কোনো একসময় অপুর পুত্র কাজলকে নিয়ে উপন্যাস লেখার আকাঙ্খা বিভূতিভূষণ করেছিলেন। কিন্তু তার জীবদ্দশায় তিনি তা করে যেতে পারেন নি।তার একমাত্র পুত্র তারাদাস বন্দোপাধ্যায় অপু-কাহিনীর তৃতীয় খণ্ড হিসেবে বহু পরে "কাজল" রচনা করেন।যদিও আমার এখোনো পড়ার সৌভাগ্য হয় নি সেটা,আপনারা পড়ে দেখতে পারেন কিন্তু! 🙂
COMMENTS